অণু গল্প - প্রচ্ছন্ন
- সীমন্তী
- Apr 14, 2022
- 2 min read
সীমন্তী
কবি তোমাকে,
আমি খুব বকবক করি আমি জানতাম । তুমি বাপু কেন এত মন দিয়ে শুনতে বলতো?
না শুনলেই হত।
তুমি সাহিত্যিক জানতাম, তাই বলে , পটাস করে একটা দাঁত ভাঙা কবিতা পাঠিয়ে মানে জিজ্ঞেস করা এ কেমন অত্যাচার ?
জানতে তো, অত জ্ঞান বুদ্ধি আমার নেই। তবু তোমার সে কি অপচেষ্টা । কবিতা পড়, গল্প পড় । এটা পড় সেটা পড়।
আসলে ঐ যোগ্য করে তোলার অপচেষ্টায় কালাতিপাত।
আরে বাবা পড়াশোনা আমার ভালো লাগতোনা কোন কালেই।
আরে ঐ ইয়ে ইয়ে যখন পেয়েছিল তোমার, আমাকে দেখে, সেতো ত্রেতা যুগে। তখনতো ঐ গেছো আদাড়ে বাদাড়ে ঘুরে বেড়ানো আমাকেইতো, ঢিলে মুড়িয়ে সেই চিঠি দিয়েছিলে নাকি?
আরে আমাকেই দিয়েছিলে না অন্য কাউকে । আমার বেশ সন্দেহ হয়।
তা অনেক বছরতো হল। যাই যাই করে কতবার গেলে , রেগে গেলে ,খেপে গেলে কিন্তু যাওয়াতো হলনা।
সেই ফিরে আসা কদিন একটু ভাবসাব হল কি না হল গাবদা বই ধরিয়ে পড়াতেই হবে।
তা ঐ ইয়ের বসে আমিও পড়লাম পড়ছিও।
সেই বনলতা ,নীরা ,নন্দিনী , বিনোদিনী ,রাধা সব পড়লুম ও বাপু তোমার পাল্লায় পরে। আমিও নিজেকে ভাবলাম ওদের মত। ঘন চুল, গোলাপ ঠোঁট , দীঘির মত চোখ। তবে তোমার ঘরনী হলে ঐসব হওয়া যায়না সে বিলক্ষণ বুঝেছিলাম।
এত বছর পরে তা বেশ কটা প্রশ্ন মনে ঘুরঘুর করছে। আমিওতো তোমার ঐ হয়েই রইলাম। কী যেন নাম দিয়েছিলে? হাস্নুহানা।
সেই হাস্নুহানার জন্য অনেক পুরষ্কার এলো যুগলে গেলে হাসি হাসি মুখ মঞ্চ আলোকিত হল।
তা তিনিই প্রেরণা তিনিই অন্তরের হাস্নুহানা প্রমাণ হল। লোকে ধন্য ধন্য করলো।
আমার এখন প্রায় শেষের বেলা। চুলে পাক, গেঁটে বাত। চোখে গভীর কালি।
তা বাপু, ঐ বনলতার মাথায় সাদা চুল, নীরার পা ফাঁটা নন্দিনীর হাঁপের টান এগুলো নিয়ে তোমরা কবিরা একটু আলোকপাত কর দেখি।
আরে বলি ওদের ও বয়স বাড়ে নাকি?
তবে কী , বনলতা ,নীরা ,নন্দিনীরা শুধু ঘন কালো চুল আর গোলাপ পাতার মত পা তোমরা মনে রাখো কবি ?
এইযে শেষবয়সের একাকীত্ব , তোমার হয়ে থাকতে গিয়ে জগত সংসার বিচ্ছিন্ন একা হয়ে যাওয়া এর মূল্যায়ন কী কোনদিনই হবেনা?
এত যুগ তোমার হয়ে থেকে আমরাও বড় ক্লান্ত কবি।
মুক্তির অপেক্ষায় ,
তোমাদের কল্পনা।
コメント