কবিতা - বিশ্বাসের পাড় ভাঙে নিঝুমে এবং একদিন ঠিক মিলে যাবেই
- সুমন্ত চক্রবর্তী
- Jun 15, 2020
- 2 min read
Updated: Dec 16, 2020
বিশ্বাসের পাড় ভাঙে নিঝুমে...
যে মেঘটির কথা ছিলো বৃষ্টি আনার, মাঝ আকাশেই হঠাৎ করে উধাও হলে, কি করবে মেঘনা নদী তৃষ্ণা বুকে, মৃত্তিকা তার মুখ ধোয়াবে কোন সে জলে ?
আর কটা দিন সবুর করো চাকরি পাবোই , মেয়েটিকে যে প্রেমিক রাখে অপেক্ষমান, কোন আশাতে বাঁধবে সে বুক সন্ধ্যা হলে, যে চাকরি পেয়েই অন্য মেয়ে,ধরছে বিমান।
আকাশ পথে গেছে ভেসে কান্নার জল, বুক ভেঙে যায়, খানখান হয় বজ্রপাতে, সে ছেলে যে পিছন পানে তাকায় না আর, তার অসুস্থ বাপ বৃদ্ধাবাসে অপেক্ষাতে।
হাজার রঙিন স্বপ্নভরা প্রতিশ্রুতির, লম্বা লম্বা মস্ত বুলির নেতার ভাষণ, সব ভেসে যায় বিসর্জনের ভাসান গানে, হাতের মুঠোয় জুটে গেলে ভোটের আসন।
বহু শ্রমে,সময়,দামে,পাশ করেছে, ভালো কাজে থাকবে সুখে আশায় আশায়, প্রতিটা বার চাকরিটা তার হারায় নাগাল, কোনো না কোনো নেপোয় এসে দই মেরে যায়।
এমনি শত বুক ভেঙে যায় অন্ধকারে, বৃথাই চেষ্টা জল ফেরে না মরা গাঙে, শ্বাস থামলে অক্সিজেনে কাজ হয় না, বিশ্বাসেরও নিঝুম রাতে দু পাড় ভাঙে॥
একদিন ঠিক মিলে যাবেই ...
নবীন যুবক যদি ভাবো তোমার জন্য, আলোর আকাশ আর অবকাশ যাচ্ছি বুনে, আমি বলবো, তুমি আজো ঘুমিয়ে আছো, অলীক কোনো গল্প শুনে।
না তোমার জন্য, বিনা বাধার সকল আঁধার ঘুচিয়ে যাওয়ার, ইচ্ছে যতোই পুষি বুকে, তবুও জেনো, ফারাক কিছু থেকেই যাবে চায়ের কাপ আর ঠোঁট চুমুকে!
তেমন ভরসা সত্যি করেই কোত্থাও নেই। কেউ দেবে না সাজিয়ে, তোমার ভবিষ্যতকে সহজ পথে, যদি না তুমি তোমার বুকের জোর না আনো রোজ শপথে।
নিজেই নিজের কান্ডারী হও, নতুন আশার বীজ বুনে যাও, 'অন্ধকারেই আলো ফোটে', সে উচ্চারণ তোমার ঠোঁটে উঠুক ফুটে। এমন একটা দিনকে এনো, যেদিন তুমি হো হো করে হেসে উঠে, বলবে আমার দরকার নেই, সুবিধা কোনো পিছ্ দরজার, কিংবা সাপোর্ট- লোকাল থেকে বিশাল কোনো বিরাট রাজার। তুমি একাই একশো থেকে হাজার হাজার- ছড়িয়ে পড়ো ভুবন জুড়ে, সকল পাপের, শোক বিলাপের, টুঁটি ছিঁড়ে হাসতে থাকো ।
হাসতে হাসতে মেঘ হয়ে যাও আকাশ ছোঁয়া, তোমার পুণ্য স্পর্শ বৃষ্টি ধোয়া, হয়ে আবার ছড়িয়ে পড়ুক মাটির বুকে, শস্য সুখের আহ্লাদেতে ছড়িয়ে থাকো সজীবতায়, নতুন পাতায় সবুজ সবুজ ছড়িয়ে থাকুক, তোমার নবীন ভাবনার রঙ।
আমরা বরং দূরের থেকে দু চোখ ভরে দেখতে থাকি, তোমার জয়ের উড্ডীন সেই পতাকা খানি, স্বর্ণ রথে মন পালকে শিরশিরানি, সুখের এবং এক আকাশের তৃপ্তি নিয়ে, দুহাত ভরে মোদের বুকে আস্থা বাঁচুক - তোমায় নিয়ে, আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম , আমরা আস্থা রেখেছিলাম, একদিন ঠিক মিলিয়ে দেবো ফারাকখানি, চায়ের কাপ আর ঠোঁট চুমুকে ॥

কবি পরিচিতি : সুমন্ত চক্রবর্তী, বর্তমানে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার আগরপাড়া নিবাসী, বাঙলা সাহিত্য অনুরাগী যে কোনো গড়পড়তা বাঙালীর মতোই। বাঙলা সাহিত্যের অমূল্য বিবিধ রতনে আকৃষ্ট সেই ছেলেবেলা থেকেই। পাশাপাশি কবিতা,কবিতা পাঠ ও আবৃত্তির প্রতি ভালোবাসা বরাবর। প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা সমাজতত্ত্ব নিয়ে। লেখালেখি ছোটোবেলার থেকে টুকটাক থাকলেও অতি সম্প্রতি মানে বছরখানেক শখের ছড়া বা কবিতায় হাত পাকানো চলছে। বর্তমানে পশ্চিম বাঙলার একটি পৌরসভায় কর্মরত ।
Comments