top of page

অণুগল্প - সহচর

  • দীপাঞ্জন মাইতি
  • Dec 24, 2019
  • 2 min read

সময় যত এগোচ্ছে তত অস্থির লাগছে, উত্তেজনায় কাঁপছে অতশীর গোটা শরীর। মৃন্ময়দা বন্দোবস্ত করে রেখেছে সব। বছর পনেরোর অতশী জানে গরীবের স্বপ্ন দেখা পাপ... তবু স্বপ্ন যে থাকেই। মৃন্ময়দা নিয়ে গেছিল মিতালী মাসির কাছে। মাসি বুঝিয়ে বলেছিল "মা বাবা এখন না মানলেও আস্তে আস্তে যখন ঘর বাড়ি সব গুছিয়ে দিবি, যখন সখ পূরণ হবে; দেখবি ঠিক বুঝবে।" অতশী কথাটা বিশ্বাস করতে চেয়েছিল খুব করে; অতশী জানে মৃন্ময়দা পারে... । বাগদি পাড়ার অঞ্জলির, পিছন বস্তির আমিনা, আমিনার বোন বাতাসী সব মৃন্ময়দারই বন্দোবস্তে আজ...। সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে দ্রুত হাতে সামান্য তাও যা তার নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যাগে পুরে ফেলল অতশী। এখনও ভর দুপুর। সন্ধে নামার অপেক্ষা করতে হবে অতশীকে...

বছর পনেরো আগে, ঘর তাড়ানো ছেলেটা শাহিনা বিবির দলে যখন ঠাঁই নিয়েছিল তখন বয়স মাত্র বারো। বরাবর মাথা পরিষ্কার মৃন্ময়... এখন দলের মাথা। ঘোমটার তলায় পুরুষে পুরুষে শরীরী টানটা কত স্বাভাবিক কতটা ট‍্যাবু, মৃন্ময় জানে। অলিগলি ঘুরে ঠিক খবর থেকে কন্ট‍্যাক্ট সবের জোগাড়, এখন তার জানা। আগে ব্ল‍্যাকমেল অন্যায় লাগতো; এই লাইনে এসে আর লাগে না। মেয়েগুলোর অন্তত কিছু স্বপ্ন তো পূরণ হবে, না হলে, বিয়ে, বাচ্চা, এক বিষে জীবন ফিনিশ। সে মরেই হোক বা বেঁচে। এসব কাজে পুলিশের সাথে ষাটগাঁট ছাড়া হয় না... আজো থানার সাথে ফুল সেটিং আছে। লগ্ন সাড়ে আটটায়, ছেলে ঢুকবে সাতটায়, সাতটা থেকে সাতটা দশের মধ্যে সিন থেকে অতশীকে গায়েব করতে হবে। পুলিশের গাড়ি রাখা থাকবে ঠিক জায়গায়। এবার অতশী না বিগড়লেই হল। . দশ বছর পর... . না সেদিন ছড়ায় নি অতশী। বিয়ের মণ্ডপ থেকে মৃন্ময়দার হাত ধরে পালিয়ে এসে সোজা উঠেছিল সহচরে। সহচর, মিতালীমাসির শেল্টার হোম। তারপর এক এক করে স্বপ্নপূরণ হয়েছে অতশীর - স্কুল, কলেজ... তিন বছর আগে চাকরীর এক বছর পূর্ণ করে ফিরেছিল বাড়ি অতশী। ততদিনে বাবা...। এখন অতশী, মা আর মিতালী মাসির সাথে 'সহচর' সামলায়। সহচর বড় হয়েছে, মিতালীমাসি বুড়ি; আত্মার টানে মাতৃত্বের দায় আজো পূরণ করে চলেছে রূপান্তরকামী মৃন্ময়, বৃহন্নলার বেশে।





Comments


নীড়বাসনা  বৈশাখ ১৪২৯
bottom of page