top of page

অণুগল্প - মি টু

  • মানসী গাঙ্গুলি
  • Dec 24, 2019
  • 2 min read

একা মেয়ে নিরাপদ নয় তাই মা বন্দনা সঙ্গে করে কাজের বাড়ি নিয়ে যেত ১২ বছরের মেয়ে মিনাকে। একা মানুষ অকৃতদার,তার সমস্ত কাজ করতে হবে সকাল দশটার মধ্যে। তাই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া,তাতে মেয়েও চোখে চোখে রইল আবার কিছুটা কাজেও সাহায্য হত।


মালিক বিশিষ্ট অধ্যাপক রমেনবাবুকে ভগবানের চোখে দেখত বন্দনা। মেয়েকে বলত,"এতগুলো টাকা মাইনে দেয় বলেই তো দুটো পেট যেমন চলে তোর লেখাপড়াটাও বন্ধ হয়নি"। মিনা লেখাপড়ায় খুব ভাল, কাজের ফাঁকে ওবাড়িতে বসে পড়াশোনাও করত সে। বন্দনা মেয়েকে দিয়ে চা-টা,জলখাবারটা রমেনবাবুর ঘরে পাঠালে তিনি মেয়েকে আদর করে কাছে বসাতেন,নিজের খাবার থেকে খাইয়ে দিতেন। মা তো খুব খুশি মেয়ের আদর দেখে,কাজে গিয়ে মন দিত খুশি মনে। মিনাকে তখন একা পেয়ে রমেনবাবু তাকে জড়িয়ে ধরে কোলে বসাতেন,জামার ভেতর দিয়ে তার বুকের সদ্য উন্মোচিত পুষ্পকোঁড়ক দুটিতে হাত দিতেন, গোপনাঙ্গে হাত দিতেন,মিনার হাতটা তার উত্থিত পুরুষাঙ্গে চেপে ধরতেন। ভয়ে মিনার মুখ পাংশুবর্ণ হয়ে যেত। পেট বড় দায়। অসহায় মেয়ে মাকে কিছু বলতে পারত না। লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদত কেবল। প্রতিসন্ধ্যায় কাজের শেষে মিনাকে তাঁর কাছে রেখে দিতেন পড়ানোর জন্য আর মায়ের অনুপস্থিতিতে তার শ্লীলতাহানি করতেন পিতৃতুল্য রমেনবাবু।


বুকের ভেতর অসহ্য যন্ত্রণা,মনের ভেতর দুর্দমনীয় ক্রোধ,তবু মিনা পড়াশোনাটা মন দিয়ে করেছে। পরে বড় হয়ে সে ওবাড়িতে যাওয়া বন্ধ করেছে তবু ক্ষতটা যেন দগদগে হয়ে রয়েছে বুকের ভেতর। মুখে হাসি নেই,লক্ষ্য কেবল একটাই,চাকরি,টাকা রোজগার। অদম্য জেদ নিয়ে টিউশন করে পড়ার খরচ চালিয়েছে ও। ইকোনমিক্সে এমএ পাস করে এক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জয়েন করেছে মিনা।


মনের ভেতর রাগ পুষে রাখতে রাখতে মন বিদ্রোহ করে। আজ ওর প্রথম স্যালারি হাতে এসেছে। এখন ও স্বাধীন। মাকে আর ওবাড়িতে কাজ করতে দেবে না ,তারপর ওই নোংরা লোকটার মুখোশটা টেনে খুলে দেবে,নাহলে ওর শান্তি নেই। বিদেশে আন্দোলন চলছে অনেকদিন থেকেই, এদেশেও তার ঢেউ আছড়ে পড়েছে। মনের সঙ্গে অহরহ যুদ্ধ করতে করতে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দিল #মি টু। অধ্যাপক রমেনবাবুর নামে তার সমস্ত ক্ষোভ উগরে,তাঁকে ট্যাগ করে। নিমেষে ছিছিক্কারে ভরে উঠল তাঁর ওয়াল।



Comments


নীড়বাসনা  বৈশাখ ১৪২৯
bottom of page