ছড়াক্কা-নাটিকা - আজব রাজার আজব অসুখ
- সতীশ বিশ্বাস
- Mar 1, 2019
- 6 min read
চরিত্র:
রাজা,
মন্ত্রী,
১ম দূত,
২য় দূত,
৩য় দূত,
৪র্থ দূত,
২ পারিষদ,
ঘোষক
ও
যুবক
প্রথম দৃশ্য
ঘোষকঃ ( মঞ্চে এসে) -
মহারাজ আজব-আদিত্য আসছেন দরবারে
(মন্ত্রী মঞ্চে প্রবেশ করে রাজাকে আহ্বান জানান। রাজা দু’জন পারিষদ নিয়ে প্রবেশ করেন। পারিষদ দু-জন রাজার দু-পাশে দাঁড়ায়। রাজা সিংহাসনে বসার সঙ্গে সঙ্গে নেপথ্যে কোরাস শোনা যায়ঃ ‘সিংহাসনে বসল রাজা / বাজল কাঁসর ঘণ্টা’। কাঁসর ঘণ্টা বাজতে থাকে। কিছুক্ষণ পর থামলে ঘোষক বলে-)
ঘোষকঃ
এবার রাজা একে একে
সব দূতেদের মুখ থেকে
নানান রকম নেবেন খবর
ছোট,বড়,খারাপ,জবর।
প্রথম দূত, আসতে পারো
রাজসভা-মাঝারে।
১ম দূত: ( মঞ্চে ঢুকে অভিবাদন করে বলে-)
মহারাজ, দেব আজ বড়ো সুসংবাদ
এ বছর প্রজাদের
কারো চোখে নাই জল;
কারণ ফলেছে রাজ্যে
পর্যাপ্ত ফসল।
ওহো,এমন সংবাদ দেব-কতদিনের সাধ!
রাজা: চোপ্, বেয়াদব রাজসভাথেকে এখনি হয়েযা দূর !
( দূতের প্রস্থান)
ঘোষকঃ দ্বিতীয় দূত কি হাজির?
২য় দূত: এসেছি হুজুর, সঠিক সময়ে
আসা তো আমার কাজই।
সঙ্গে এনেছি সংবাদ বয়ে।
মহারাজ, আজ গোটা দেশ জুড়ে বইছে খুশির সুর।
কীবলব প্রভু, নিজের দু-চোখে এসেছি তাদের দেখে-
যে সকল খেলোয়াড়
কিছুতে মানে নি হার।
বাড়িয়ে দেশের মান
হয়েছে চ্যাম্পিয়ান।
হাসি-খুশি যেন গড়িয়ে পড়ছে প্রজাদের মুখ থেকে।
রাজা: থামো নির্বোধ! বিদেয় হও এখুনি। ( ভয়ে দূতের প্রস্থান )
ঘোষকঃ কোথায় তৃতীয় দূত-
খবর দাও নিখুঁত।
৩য় দূত: (প্রবেশ)
পেন্যাম মহারাজা,
খবর এনেছি তাজা-
যেখানেই যাই শুধু আপনার ‘ধন্য ধন্য’ শুনি।
কারণ এ বছর মৎসচাষ আর শিল্প ও বিজ্ঞানে
এসেছিল সব দেশই,
প্রচণ্ড রেষারেষি!
টপকিয়ে সব বেড়া,
আমরা হয়েছি সেরা।
কীভাবে প্রকাশ করব আমারপ্রাণের খুশি,কে জানে!
রাজা:
(ব্যঙ্গ) আপাতত সভা ত্যাগ করো, তারপরে
যেমন খুশি চেঁচাও
বুক মাথা চাপড়াও।
(ঘোষককে) পরের দূতকে ডাকো।
(আর,)খুব করে ওকে ঝাঁকো-
যেমন চাই,ওর গলা থেকে যেন তেমন খবরই ঝরে।
ঘোষকঃ
এবার আসুন চতুর্থ দূত, কী খবর আছে, দ্যান-
৪র্থ দূত:(প্রবেশ)
আহা! শিক্ষার হাল রাজ্যে কি অপরূপ!
রাজা:
উফ্! ( শব্দ করে, রাজা জ্ঞান হারিয়ে ঢলে পড়েন)
মন্ত্রীঃ এই সেরেছে, কী করি!
টেনশানে আমি মরি,
শিক্ষার কথা শোনামাত্রই রাজা হারিয়েছে জ্ঞান।
উটকো বিপদে ফেললেআমাকে, কী ঝামেলা! হায়!হায়!
কোথায় আছিস কে রে?
শিগ্গির আন জল,
ছিটিয়ে দে চোখেমুখে
হাওয়া কর অবিরল,
ওই তো মেলেছে চোখ,বাঁচা গেছে।
রাজা:
একি,এ আমি কোথায়?
কেন এরা সব রেখেছে আমায় ঘিরে?
মন্ত্রীঃ (আপনি) হারিয়েছিলেন জ্ঞান;
আমি হয়ে চঞ্চল
চোখে মুখে দিই জল।
তাতেই বেঁচেছে প্রাণ।
রাজা: কখন যে গেল জ্ঞান, আর এল ফিরে
বোঝাই গেল না; তবে মনে হয় ঠিক,
নিজেকে তো আমি চিনি,
দেখছি অনেকদিনই,
কোথায় দুর্বলতা
আমি তো জানি সে কথা!
ধরেছে আমাকে যে রোগ, সে রোগ বড়ই সাংঘাতিক!
মন্ত্রীঃ না না, মহারাজ-
রাজা: (ধমকে থামুন,আপনি থামুন।
বলছি-‘ধরেছে’,তবু
কথার উপরে কথা!
মন্ত্রীঃ ক্ষমা করবেন প্রভু,
অধমের বাচালতা।
আপনি দেশের সেরা সম্রাট, বর্ণশ্রেষ্ঠ বামুন।
একটু আগেই দিলেন যে ধমকানি
শুনিয়েছে মিন-মিনে,
ছিল না কোনই দম;
কোথায় সে বিক্রম?
উবে গেল একদিনে!
যদি বলেন তো বৈদ্যকে ডেকে আনি।
রাজা:
যা করার আপনি করুন; চান তো, যান
মন্ত্রীঃ যাচ্ছি এখুনি আমি। (প্রস্থান)
রাজা: ওরে বাবা,এ কী হল?
ঘোরাচ্ছে কেন মাথা?
পা দুটোও টলমলো!
বুকের মধ্যে থেকে থেকে কেন ছটফট করে প্রাণ!
১ম পারিষদঃ
আপনি তো খুব ভেঙে পড়েছেন;কেমন লাগছে প্রভু?
রাজা: জানি না লাগছে কেমন।
যেন মুকুটের নিচে
লাফাচ্ছে কিছু, লাফায়
উইচিংড়েরা যেমন।
হয়তো তেমন সিরিয়াস কিছু হয়নি আমার; তবু-
মন্ত্রীঃ
রাজবৈদ্যকে এনেছি রাজন, আসতে বলি তাহলে ?
রাজা:
আচ্ছা আহাম্মক তো আপনি!
(এদেরকে পুষি! নুন দি-!)
না এলে দেখবে কীভাবে? আপনি-
হয়ে যান ন্যাড়ামুণ্ডি।
মন্ত্রীঃ
কেন ন্যাড়া,প্রভু! সর্বদা থাকি আপনার পদতলে?
রাজা:
কারণ আপনার মাথায় মানানসই নয় পাকা চুল।
মন্ত্রীঃ
হবে না এমন কোনদিন আর।
বৈদ্যমশাই, ভিতরে আসুন,-
বৈদ্যঃ
পেণ্ণাম হই, হবে একবার
শুতে আপনাকে রাজা।
(বৈদ্য রাজার জিভ,চোখ,হার্টবিট,রক্তচাপ দেখলেন। তারপর রাজার দুই পেটে কাতুকুতু দিলে তিনি এঁকেবেঁকে হাসতে থাকেন। তা দেখে বৈদ্য বললেন-)
দিব্যি আছেন; রাজার শরীরে নেই কোত্থাও ভুল।
মন্ত্রীঃ (মুখ ফসকে-)
নিশ্চয়ই আছে আলবত আছে। অন্তত থাকা দরকার।
না না, আমি মানে বলতে চাইছি-
লুকিয়ে টুকিয়ে থেকে যায় যদি...
হোক না যতই রাজার বদ্যি-
ভুল হয়ে যেতে পারেই; বরং
বেশ ভাল করে বদ্যিমশাই দেখুন আরেক বার।
বৈদ্যঃ
আবার বলছি-সব দেখে শুনে লক্ষণ না পেলাম।
মন্ত্রীঃ
পান নি কি কোন রাম?
বৈদ্যঃ
একাকে কি পাওয়া যায়?
মন্ত্রীঃ
অন্তত কি ভরত-শ...?
বৈদ্যঃ
না,না,নেই কোন উৎস!
তবে ভাবছি কি-এসেছি দেখতে; আর কি দেখে গেলাম।
(প্রস্থান)
মন্ত্রীঃ
মহারাজ,আর আমাদের নয় ঠিক চুপচাপ থাকা
রাজ্যের পথে পথে
ঢ্যাঁড়া যাবে সবখানে
যাতে সব্বাই জানে
সারাবে যে রাজব্যাধি
তাকে দেওয়া হবে দশবিঘা জমি,সঙ্গে সোনার টাকা।
কত টাকা দান করা হবে প্রভু,বলুন একটি বার-
রাজা:
সেটাও বলতে হবে?
মন্ত্রীঃ
আপনি যে মহারাজা,
টাকা সব আপনার।
রাজা:
না, টাকা প্রজার; তবে
রাজকোষটির কেবলমাত্র ছোট চাবিটি আমার।
মন্ত্রীঃ
বেশ,এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা ঘোষণায় তবে রাখি?
রাজা:
ওরে বাবা,অত টাকা!
মন্ত্রীঃ
টাকা তো প্রজার, প্রভু।
রাজা:
সে তো ঠিক কথা; তবু—
মন্ত্রীঃ
কমিয়ে দেব কি জমি?
আচ্ছা রাজন,রাজ্যের সব জমিও প্রজার না কি?
রাজা:
ন্যাড়ামুণ্ডি কি সাধেই বলেছি হতে?
নিজস্ব যদি হ’ত
তুচ্ছ কারণে তবে
দিতাম কি এতসব?
আপনার শৈশব
কাটেনিএখনও, শুধুই কেবল জল বয়ে গেছে স্রোতে।
মন্ত্রীঃ
(ইয়ে,মানে,) ব্যবস্থা করি তবে ঢ্যাঁড়া পিটোবার?
রাজা:
হ্যাঁ,করুন এমন, যাতে—
সবার চোখ হয় ট্যারা!
ঢ্যাড়াওলাঃ
(প্রবেশ ক’রে-)
ঢ্যাঁড়া ড়াড়া- ড়াড়া-ড়াড়া!
এতদ্বারা বলি শোন-
রাজার অসুখ;যদি কোন ডাক্তার
বৈদ্য কিম্বা,কবিরাজ,ওঝা হাতুড়ে বা নাগরিক
সারাতে পারে অসুখ;
হাসিতে ভরায় মুখ
রাজা মশাইয়ের; তবে
তার হাতে দেওয়া হবে
হাজার স্বর্ণমুদ্রা এবং দশ বিঘা জমি, ঠিক।
দ্বিতীয় দৃশ্য
( দেখা যায়, চিকিৎসকদের লাইন পড়েছে। সবাই ধাক্কাধাক্কি করছেন। গেটে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী। রাজার ঘর থেকে একজন বেরিয়ে যেতেই এক তান্ত্রিক এগিয়ে এলেন-)
তান্ত্রিকঃ
ব্যোম শঙ্কর!-
মন্ত্রীঃ
আপনি কে? দিন পরিচয় আপনার
তান্ত্রিকঃ
ব্যোম শঙ্কর! হামি এই মুলুকের
শ্যাঁওড়াতলা ঘাটের
তান্ত্রিক আছি। জল
ছেটাবে হামি তো,
শ্মশানকা কংকাল
এক-এক-করকে লাফিয়ে উঠবে। আর
সব আদমি কো ভি করবে সে সেলাম।
বিমার শুনে এলাম।
মন্ত্রীঃ
(চুপি চুপি)
গোপন ইচ্ছে কারো
পূরণ করতে পারো?
তান্ত্রিকঃ
পারবে না কেনে-জরুর পারবে।
(মন্ত্রীর চোখ লক্ষ করে)
বেটা হামি তোর খোয়াব দেখতে পেলাম।
মন্ত্রীঃ
(প্রণাম করে। তান্ত্রিক কমণ্ডলু থেকে জল ছিটিয়ে বলতে থাকে-)
হ্রিং! ট্রিং! ফট!- পট পটাং পট-পট পটাং!পট!-পট!
পুরা হোগা-পুরা বেটা
দিলমে খোয়াব যেটা।
(মন্ত্রী মাথা নোয়ায়।তান্ত্রিক মাথার উপর হাত রাখে।)
মন্ত্রীঃ
(চুপিচুপি)
আস্তে বলুন,আস্তে হে তান্ত্রিক,
পরে আমি গিয়ে দেখা করে নেব ঠিক
আপনি এবার রাজার বিমার দেখে দিন চম্পট।
(তান্ত্রিক রাজার ঘরে ঢোকে। মন্ত্রী লাইনের দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে-)
মন্ত্রীঃ
এই চোপ্! কেন ধাক্কাধাক্কি ? এটা কি রাশান-লাইন?
লক্ষ্মী ছেলের মতো দাঁড়াও; তবে না...
ফের! তোমরা না দেশের চিকিৎসক?
দূর,তোমাদের দিয়ে কিস্যু হবে না।
এখানে দেখছি পুলিশ আবশ্যক! ছি!ছি!ছি!কী দশা!!এ রাজ্যে নেইএকটি ফোঁটা আইন।
তান্ত্রিকঃ (বেরিয়ে)
ব্যোম শঙ্কর! রাজার শরীরে কোনই বিমার নাই।
মন্ত্রীঃ (বিড়বিড় করে)
কোন বিমারই নাই!
দূর ছাই! দূর ছাই!
সব স্বপ্ন বিফল!
অপদার্থের দল!
এখন একজন মনের মত চিকিৎসক কোথা পাই!
(জনৈক যুবকের প্রবেশ)
যুবকঃ
আসতে পারি কি?-
মন্ত্রীঃ
কে বাপু হে তুমি? কোন জাতি? কোন দল?
যুবকঃ
আমি এক নাগরিক;
এসেছি রাজার কাছে,
মনে এক-ইচ্ছে আছে-
ভার নিতে চাই রাজার চিকিৎসার।
মন্ত্রীঃ
হুঁ-হুঁ! কত হাতি গেল তল, চামচিকে বলে-হাঁটুজল!
যুবকঃ
তবু করেছি এ পণ-সারাবোই রাজার আমি অসুখ
মন্ত্রীঃ
রাজার অসুখ, তবে
তুমি কি বলছো-আছে?
মহাব্যাধি-ট্যাধি কোন?
(আস্তে) শুনেই যে প্রাণ নাচে।
যে হও-সে হও,ভগ্ন এ প্রাণে দিলে তুমি বড় সুখ।
যাওএবার,ঘরে ঢুকে,রোগী দেখো,ধরা চাই কিছু খুঁত।
মন্ত্রীঃ
(যুবক ভিতরে গেলে )
এবার বোধ হয়- ঠিক কাজ হবে।
যুবকঃ
(দেখে বেরিয়ে এসে)আচ্ছা,মন্ত্রী বলুনতো কবে,
কীভাবে এ ব্যাধি হল?
মন্ত্রীঃ
ওই তো যখন রাজার সভায়
একে একে এসে রাজার সামনে চার-চারজন দূত
পুলকিত হয়ে বলছিল সব অগ্রগতির কথা।
তক্ষুনি রাজা হারালেন তাঁর জ্ঞান।
যুবকঃ
বুঝেছি’এবার সব দূতদের আনান।
(দূতেরাএলে তাদের নিচু স্বরে)শোন,যা বলেছ সেবার
উল্টো বলবে এবার।
আশা করি, দূর হয়ে যাবে তাতে রাজার সকল ব্যথা।
আগে রানীমার সঙ্গে একটু দেখা করতে যে চাই।
মন্ত্রীঃ
সেকি! কেন? কী কারণ?
কী বলতে চান, বলুন আমাকে।
যুবকঃ
সে কথা বলা বারণ।
যা বলার সব বলা যাবে রানীমাকে।
অন্দরে-তবে রানীর সঙ্গে দেখা করে আসি- যাই।
তৃতীয় দৃশ্য
মন্ত্রীঃ
দূতেরা সভায় একে একে যাও-
রাজা:
(১ম দূতকে ঢুকতে দেখেই)
সুসংবাদ আবার?
১মদূতঃ
না,না, মহারাজ আমাকে শাস্তি দিন।
দিয়েছি ভুল খবর।
আসলে কিন্তু ফসলের দশা ক্ষীণ,
ভেঙে গেছে বাড়ি-ঘর।
রাজা: (খুশি হয়ে)
পারি বিশ্বাস করতে কি দূত, এ সংবাদ তোমার?
১মদূতঃ
এতে নেই একবিন্দু মিথ্যে,জানাচ্ছি মহারাজ।
রাজা:
কোষাধ্যক্ষ, একে-
একশো মুদ্রা এক্ষুনি করো দান।
( কোষাধ্যক্ষ তাই করে। দু-জনের প্রস্থান )
২য়দূতঃ
(প্রবেশ) কী সর্বনাশ ঘটেছে। অবাক প্রাণ।
বুক ফেটে গেছে দেখে।
রাজা:
খবর জানাও,তাড়াতাড়ি দূত। ভুলে গেলে নিজ কাজ?
২য়দূতঃ
আন্তঃরাজ্য ক্রীড়া-প্রতিযোগিতায়
ব্যর্থ রাজ্যদল।
কত যে কেঁদেছি আমি,
(নিজের চোখ দেখিয়ে) দেখুন,এখনও জল।
ছি! ছি!ছি! কী শোচনীয় ফল!
রাজা:
(আরো খুশি হয়ে)
কোষাধ্যক্ষ, এই দূত যেন দু’শত মুদ্রা পায়।
৩য়দূতঃ (প্রবেশ)
মহারাজ,এখন প্রত্যেকদিন কান্না শুনি প্রভাতে।
নেই আজ কারো ঘরে
এক টুকরোও দানা
চলছে রাজ্যে খরা!
কী হবে যে- নেই জানা।
রাজা:
(দারুণ খুশি হয়ে)
কোষাধ্যক্ষ, তিনশো মুদ্রা দাও তুলে এর হাতে।
৪র্থ দূত:
এ রাজ্যে, সব থেকে শিক্ষায় আজ দুরাচার।
ছাত্র আজ ছাত্র নেই আর
সম্পর্ক ভেঙে খান খান
কলুষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
মহারাজ, নেমে গেছে শিক্ষার মান।
(নিজের গলার মালা খুলে-)
ঘরে যাও হেসে হেসে। নিয়ে এই রত্নের হার।
(দূতের প্রস্থান)
(রাজা মঞ্চে ঘুরে ঘুরে)
আর আমার দেহে মনে কোন রোগ নেই।
কারণ কাটাব দিন আনন্দেতেই।
রাজ্যের যত ক্ষেত-চাষি,
শ্রমিক,মজুর, মেহনতি,
কারো মুখে নেই কোন হাসি
সব্বার কাটে দিন,শুধু ভাবনাতেই।
খেলোয়াড়,শিল্পী ও বিজ্ঞানী যারা
এ বছর হেরেছে গো-হারা
তাদের একমাত্র চাওয়া হবে
জিততে পারবে ফের কবে।
তেমন নির্দেশই জারি রবে।
হতে হবে রাতদিন খেটে খেটে সারা।
সব থেকে বড়ো আর সুখের সংবাদ
রাজ্যে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কোন
নেই কোন তেমন যুবক
তার্কিক,পণ্ডিত, বিবেচক
যে বুঝবে নগ্ন শোষণও!
যে করবে আন্দোলন ও তীব্র প্রতিবাদ!
কী বলবো-এ আমার স্বপ্নপূরণ তুল্য!
জোটাতে পেটের ভাত
প্রজাদের দিন কেটে যাবে।
তাকাতে রাজার দিকে
সারাদিনে ফুরসত না পাবে।
তাই আমি সুস্থ আজ, দারুণ প্রফুল্ল।

Comments