top of page

অণুগল্প - সমান্তরাল পৃথিবী

  • অনন্যা ব্যানার্জি
  • Dec 2, 2018
  • 2 min read

Updated: Feb 20, 2021

"মা, আমার পরী ঠিক আছে? ওর কী আবার জ্বর এল?" - চিন্তাভরা কণ্ঠে অতসী মা রমা দেবী কে জিজ্ঞেস করে। রমা দেবী সজল চোখে তাকায় অতসীর বাবা অতনুর দিকে। অতনু বাবু ভরসা দেওয়ার কণ্ঠে বলেন-"মা, তুই ভাল না হলে তোর পরীর দেখাশুনো করবি কী করে, মা?"

"বাবা, আমার সময় কোথায় নিজের কথা ভাবার? কত কষ্ট করে পরী আমার কোলে এসেছে, তুমি তো সব জানো"

"হ্যাঁ, জানি তো মা, কিন্তু সত্যিটাকে তো আমাদের মেনে নিতেই হবে।" - ভরসা দিতে মেয়ের পাশে গিয়ে বসেন অতনু বাবু।

"মা, বাবা ভুলে গেছে, পরী ওয়াস নট লাইক এনি আদার ইনফ্যাণ্ট,শী ফট হার টাফ ব্যাটল"

চোখ মুছে রমা দেবী আবার মেয়ের পাশে এসে বসেন - -"জানি তো, তোর মেয়ে তো, তাই তোর মত স্ট্রং"।

"তুমি পরীকে ওই ঘরে একা ছেড়ে এলে" - বলে দৌড়ে অন্য ঘরে যায় অতসী।


এই ঘরে তখন জামাই ডঃ সুবিমল মল্লিক শ্বশুর শাশুড়িকে সান্ত্বনা দেয় -"চিন্তা করবেন না, আপনারা। লাস্ট কয়েক বছরের ঘটনা অতসীকে মানসিক ভাবে বিভ্রান্ত করে দিয়েছে। সাইক্রিয়াটিস্ট ডঃ সেনগুপ্ত বলেছেন - "ওর সময় লাগবে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে আবার। এতগুলো মিসক্যারেজ, তারপর এত কমপ্লিকেটেড প্রেগনেন্সি আর তার পরেও শেষ রক্ষা না হওয়াটা কোনভাবেই অতসী মেনে নিতে পারছে না।"


"জানিনা ভগবানের এ কী বিচার, বাবা" - বলে আবার কান্নায় ভেঙে পড়েন রমা দেবী।


"অতসীকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনতে ও সুস্থ করে তুলতে একটু সময় দিতে হবে আমাদের ওকে, মা। এত সহজে ভেঙে পড়লে চলবে না আমাদের।" - বলে সুবিমল ভরসা দিতে চায় অসহায় পিতা-মাতাকে।

"হ্যাঁ, অতসীকে ভাল করার জন্য আমরা তোমার সঙ্গে আছি, সুবিমল। আমার মেয়ে ছোট থেকে খুবই সাহসী ও বুদ্ধিমতী। আই অ্যাম সিওর ও তাড়াতাড়ি এই ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসবে" - বলে অতনু বাবু সুবিমলের পাশে এসে বসেন।

তিনজনে হাতে হাত মিলিয়ে তারা প্রতিজ্ঞা করে - "অতসীর সাথে থাকার, তার পাশে থাকার"।


অতসী তখন অন্য ঘরে তার কল্পনার পরীকে কোলে নিয়ে সস্নেহে দুধ খাওয়াতে ব্যস্ত। পুতুলটাকে বুকে আঁকড়ে ধরে অদ্ভুত প্রাণদীপ্ত কণ্ঠে সে গাইছে -"এই করেছো ভাল নিঠুর হে, এই করেছো ভাল"। এই গানের মধ্যে দিয়ে তার মনের অভিমান ভরা আর্তি ঠিক পৌঁছে যাচ্ছে ভগবানের কাছে। দুঃখ কেটে গিয়ে সুখের সূর্যোদয় হবেই তার জীবনে।

Kommentare


নীড়বাসনা  বৈশাখ ১৪২৯
bottom of page