top of page

গল্প- পরকীয়া

  • শোভন কাপুরিয়া
  • Jul 28, 2018
  • 2 min read

Updated: Feb 19, 2021

প্রথম পর্ব

'তুই নিজের চোখে দেখেছিস!' বাবুন একটু চিৎকার করেই অতুলকে বলে উঠল। ফুড কোর্টের ভীড়ে যদিও আওয়াজ কারোর কাছে পৌছায়নি। অতুল জবাব না দিয়ে একটু রেগেই বলল 'ছবি আছে আমার কাছে...' পাশে রাখা ব্যাগ থেকে কয়েকটা ছবি বার করে বাবুনকে দেখাতে থাকল। ছবি গুলি ভালো করে দেখতে দেখতে বাবুন বলল 'কতদিন ধরে চলছে রুষার অ্যাফেয়ার?.... লোকটাই বা কে ! ছবিটা তো পেছন দিক থেকে তোলা দেখছি'। অতুল মাথায় হাত ঘোরাতে ঘোরাতে বলল 'কতদিন জানিনা কিন্তু এই লোকটার সাথে আমি অনেকদিন দেখেছি। রুষা আজকাল রাত করে ফেরে, মিথ্যা বলছে.... ব্যাপারটা হোলো যে লোকটা কে সেটা আমি জানিনা... মুখও কোনোদিন দেখতে পাইনি..পেছন থেকেই দেখেছি এখনো অবধি!' বাবুন চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে একটু ভেবে বলল 'তোকে আমি একটা কথা অনেকদিন ধরে বলব ভাবছি কিন্তু বলে উঠতে পারিনি।' অতুল মনে মনে প্রমাদ গুনল, মুখে চিন্তার ছাপ ফুটে উঠেছে, ভুরু কুঁচকে শুনতে লাগল সে। বাবুন বলে চলল 'রুষাকে যখন প্রথম দেখেছিলাম তোর সাথে তখন থেকেই আমার একটা সন্দেহ ছিল। আমার মনে হয় একটা পুরোনো খুনের সাথে ও জড়িত ছিল.... অরুণ রায় মার্ডার কেস। ওনার স্ত্রী অরুণিমা রায় তার পর থেকেই গায়েব, তারপরে একদিন শোনা যায় তিনি মারা গেছেন। আমার বিশ্বাস অরুণিমাই রুষা নাম নিয়ে আবার ফিরে এসেছে!' অতুলের মুখ যেন ছোটো হয়ে গেল, ভয়ে তার হাত পা যেন ঠান্ডা হয়ে আসছে। কাপা গলায় সে বলল 'কোনো প্রমাণ কি আছে যে রুষাই সেই খুনী?' বাবুন বলল 'সেটাই নেই! শোনা যায় অরুণিমা খুন করেছিল তার গোপন প্রেমিকের জন্য! সাবধানে থাকিস কিন্তু!' অতুল চিন্তিত ভাবে বলল 'লোকটা তাহলে সেই গোপন প্রেমিক হতে পারে? আর ওরা হয়তো আমায় সরানোর পরিকল্পনা করছে।... ' একটু থেমে সে আবার বলল 'কিন্তু তাহলে সেই গোপন প্রেমিককে বিয়ে না করে আমায় করার পেছনে কি উদ্দেশ্য?' বাবুন এবার অতুলের দিকে ঝুকে বলল 'টাকা বন্ধু টাকা! টাকা সব করাতে পারে! সাবধানে থাক , আজ উঠি।' অতুল-ও উঠতে উঠতে বলল 'চল তোকে ছেড়ে দিই... বাই দ্য ওয়ে রুষা ৩-৪ দিন হলো বাড়ী আসেনি... মনে হয় লোকটার সাথে পালিয়ে গেছে।' বাবুন ওর দিকে জিজ্ঞাসু চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকল.....

শেষ পর্ব

গাড়ি চলছে নির্জন রাস্তায় , অতুল আর বাবুন কোনো কথা বলছেনা। কিছুক্ষণ পরে বাবুন বলল 'কোনো তদন্তের মাঝে মুখ খোলা আমার উচিত না, কিন্তু এক্ষেত্রে না বলে পারছি না!' অতুল গাড়ি চালিয়ে চলেছে, মুখে কোনো কথা নেই। বাবুন বলতে থাকল 'অরুণ রায়ের কেসটা ওপেন হয়েছে , আমাদের ডিপার্টমেন্ট কিছু পুরোনো কেস রিওপেন করেছে আর এটা তার মধ্যেই পড়ে। তোকে আগে বলিনি যে আমি অনেকদিন ধরে অরুণিমা ওরফ রুষাকে ফলো করছি...কিন্তু আজ তো এইসব শুনে আমি অবাক যে ও পালিয়ে গেছে!' অতুল এতকিছু কথা শুনেও কোনোরকম জবাব না দিয়ে গাড়ি চালাতে লাগল। বাবুন এবার একটু রেগেই বলল 'কিরে কিছু বল!' অতুল কিছু না বলে নিজের মোবাইল খুলে একটা ছবি এগিয়ে দিল , বাবুন দেখে বলল 'এটাতো তোদের সেলফি.... ওয়েট, তোর জামাটা তো ওই লোকটার সাথে মিলছে...' অতুল এবার একটা চেরা হাসি হেসে বলল 'অরুণিমা আমার জন্যই অরুন রায়কে মেরেছিল আর তুই ঠিক - ই ধরেছিস অরুণিমাই রুষা। রুষার গোপন প্রেমিক আমি-ই ছিলাম কিন্তু এতক্ষন আমি যা বলেছি পুরোটাই গল্প । কিন্তু রুষাকে যদি বাচাতে হয় তোকে চুপ থাকতে হবে।' বাবুন যেন নিজের কান বিশ্বাস করতে পারছেনা, এত বড় ভুল করল। অতুলের পাতা... না না রুষার পাতা এক নিখুঁত ফাদে এরকম ভাবে পা দিল সে। এই ঘটনার পরে ৩ মাস হয়ে গেছে, বাবুন আর কাজে যোগ দেয়নি। সে কোথায় কেউ জানেনা, যেন সে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।

Comments


নীড়বাসনা  বৈশাখ ১৪২৯
bottom of page