top of page

চিঠিপত্র

  • Writer: neerbasona
    neerbasona
  • Nov 28, 2017
  • 2 min read

Updated: Feb 18, 2021

পাঠকের প্রতিক্রিয়া

খোলা চিঠি

শ্রদ্ধেয় নীড়বাসনার সম্পাদক মণ্ডলী,

অনেক সাহস সঞ্চয় করে শেষ পর্যন্ত চিঠি টা পাঠালাম, ইচ্ছে হলে ছাপাবেন, না ছাপলেও আমার কোন দুঃখ নেই। তবে অবশ্যই পড়বেন। নিজের পরিচয় আমি সকলের সামনে দিতে চাইনা। খালি এইটুকু বলে রাখি গত শতকে কলকাতা থেকে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি সূত্রে এখন দক্ষিণ ভারতের এক শহরে স্থায়ী বাসিন্দা। আপনাদের পত্রিকাটি আমি কিন্তু একেবারে প্রথম সংখ্যা থেকে পড়ছি। প্রকাশিত লেখার গুনগত মান বিচার করার সামর্থ্য আমার নেই, তবে আপনাদের এই প্রয়াস কিন্তু অনন্য। মাতৃভাষা কে বাঁচিয়ে রাখার এই প্রয়াস আর পড়ার অভ্যাস কে ফিরিয়ে আনার যে অদম্য ইচ্ছা সেটাকে আমি কুর্নিশ না জানিয়ে পারছি না।

যখন শুনলাম আপনারা পরবর্তী সংখ্যা আর দিন কয়েকের মধ্যে প্রকাশ পাবে তখন মনে হল আপনাদের এই লেখাটি পাঠাই। আমার যা কিছু বক্তব্য আছে, তা গত সংখ্যায় প্রকাশিত শুভাশিস ভট্টাচার্যের লেখা একটি কবিতা ‘আয়নার কবিতা অথবা কবিতার আয়না’ নিয়ে। আমি সাহিত্যিক নই, আবার বলছি সাহিত্যের উৎকর্ষতা বিচার করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়, তবে আমার একটা প্রশ্ন আছে। এই কবিতাটির আগে আপনারা একটি বিধিসম্মত সতর্কীকরণ দিয়েছেন। সেটির কি খুব প্রয়োজন ছিল? আমার মনে হয় সাহিত্য হল সমাজের আয়না, আর সমাজের সব কথা নির্দ্বিধায় সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় গল্প বা কবিতার মধ্য দিয়ে। সে কথা পড়ে তাকে অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে পারলে তবেই হয়তো পরিপূর্ণ পাঠক হওয়া যায়।

শুভাশিস বাবু যা লিখেছেন তা কি আমাদের সমাজে হয় না? নাকি কারো বাবা চিৎকার করে মা কে বলেন না, “আমার টাকা, আমার সংসার, মানিয়ে নাও, নইলে”, নাকি মহিলাদের পাবলিক প্লেসে যৌন ইঙ্গিত করা হয় না? নাকি ফেল করানোর হুমকি দিয়ে বাচ্চা একটি শিশুকে হাত বদল করা হয় না? নাকি অ্যাসিডে ঝলসে না যায় না একটি নিষ্পাপ মুখ? তাহলে এই সতর্কীকরণ কেন? আপনারা কি এটাকে ছাপাতে ভয় পেয়েছিলেন? নাকি শালীনতার দোহাই দিয়ে নিজেদের ইনারশিয়া কে লাগাম দিয়েছেন? নরওয়ে বা সুইডেন হলে এই সতর্কীকরণ আমি মেনে নিতাম, সেখানে শতকরা ১% মানুষ অপরাধ করে আর নারীঘটিত বা যৌন অপরাধ এই শতাব্দীতে সেখানে হয় নি। কিন্তু আমাদের দেশ ভারত, এখানে কবিগুরু, স্বামী বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধী ছিলেন শিক্ষা দেবার জন্য, অভিষেক রায় ও মহম্মদ মফিজুদ্দিন আছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কুকাজ করার জন্য। অনুগ্রহ করে ভাববেন না, আমি আজ জি ডি বিড়লায় ঘটে যাওয়া চার বছরের শিশুটির ওপর জান্তব অত্যাচারে আবেগ-তাড়িত হয়ে কথা গুলো বলছি। এই সব প্রতিবাদ, বিরোধ সব কিছু ভুলে মানুষ আবার শান্ত, উদ্বেগহীন জীবনে ফিরে আসবেন, আর অপরাধ গুলো ইতিহাসের পাতায় চলে যাবে। কিন্তু আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, সাহিত্যে শ্লীল বা অশ্লীল কিছু হয় না। এটা চলচ্চিত্রে হয়, কারণ সেখানে চাক্ষুষ পর্যবেক্ষণ হয়। আমাদের সমাজে যদি একের পর এক জঘন্য অপরাধ করে মানুষ বুক ফুলিয়ে ঘুরতে পারে তবে সাহিত্যের পাতায় সতর্কীকরণ দেওয়ার কোন যুক্তি আমি খুঁজে পাই না।

আবার বললাম আমাকে নারীবাদী বা প্রগতিশীল বা অন্য কিছু ভাববেন না। যদি আমার কথা যুক্তিপূর্ণ মনে হয় আমার চিঠিটা ছাপবেন। আর একটা কথা জানিয়ে রাখলাম আপনারা খুব সুন্দর ভাবে এগোচ্ছেন, আরো এগিয়ে চলুন। আমার মতো অনেক পাঠক পাঠিকা আছেন এবং থাকবেন আপনাদের সাথে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

Kommentare


নীড়বাসনা  বৈশাখ ১৪২৯
bottom of page