এক মুঠো গল্প
- সুস্মিতা
- Nov 25, 2017
- 2 min read
Updated: Feb 18, 2021

আব্রু ঝাঁ চকচকে শপিংমলটার ঠিক সামনেই মাথা ঘুরে পরে গেলেন তিনি।এখুনি একবার ওয়াশরুমে যাওয়া খুব প্রয়োজন।কিন্তু মলের ভিতরে নারী-পুরুষের জন্য নির্ধারিত কোনো ওয়াশরুমেই তাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।শরীর জোড়া অস্বস্তি আর চোখ ভর্তি জল নিয়ে এদিক ওদিক খুঁজতে লাগলেন তিনি .... তাকে মাটিতে শুয়ে পরতে দেখেও কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে এলো না ..... কয়েকজন দুরে দাড়িয়ে হাসাহাসি .... কয়েকটি বাচ্চা ছেলেমেয়ে ঢিলও ছুড়ে মারলো ..... তিনি একটুও অবাক হলেন না বা দুঃখিতও হলেন না .... ঠিক এইরকম ব্যবহারেই ওরা আজন্ম অভ্যস্ত .... কারুরই মনে পরে না বৃহন্নলাদেরও একটু আব্রুর প্রয়োজন হয় ..... ব্রেকিং নিউজ সংবাদপাঠের একেবারে শেষ মুহূর্তে ব্রেকিং নিউজটা এলো ....এরকম তো এসেই থাকে । দীর্ঘদিনের অনুশীলনে অর্জিত নিষ্কম্প কণ্ঠে সংবাদটি পাঠ করলেন টেলিভিশনের জনপ্রিয় সংবাদপাঠিকা - 'হায়দ্রাবাদ শহরে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন কলকাতার একই পরিবারের তিন সদস্য।' সংবাদপাঠ শেষ করে রত্নাবলী আজ একটু তাড়াহুড়ো করলেন...বাড়ি ফেরার জন্য । প্রায় আটদিন পরে স্বামী অর্ক ও যমজ দুই ছেলে আজ বাড়ি ফিরছে ...দক্ষিণ ভারত থেকে। কলেজ অ্যাডমিশন সেরে। আজ ওদের জন্য নিজের হাতে একটু রান্নাবান্না করতে ইচ্ছে করছে । রিসেপশন ডেস্ক থেকে একজন দৌড়ে এসে জানালো 'রত্নাবলী চ্যাটার্জির জন্য একটি সংবাদ অপেক্ষা করছে ...টেলিফোনে ...ব্যক্তিগত সংবাদ .... 'দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়ে ফোনের রিসিভারটি কানে তুলে নিলেন সংবাদ পাঠিকা। মাত্র কয়েক সেকেন্ড .... জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরলেন রত্নাবলী ....... জরিপ দারুণ কাটলো আজকের দিনটা ....এক কথায় অসাধারণ । ফেসবুক, ওয়াটসঅ্যাপের দৌলতে প্রায় সাতাশ বছর পরে এগারোজন বান্ধবীর পুনর্মিলন। সেই ক্লাস টেন এর ফেয়ারওয়েলের দিনটার পরে ...আজ এতো বছর বাদে সকলের দেখা হলো । কি যে আনন্দে কাটলো সারা টা দিন .... হাসি ,গান ,আড্ডা ,খাওয়া দাওয়া আর অবশ্যই মজার স্মৃতিচারণায় আবার কৈশোরে ফিরে যাওয়া ..... আনন্দের রেশটা রইলো বেশ কয়েকদিন । নূতন করে ফোন নম্বর আদান প্রদান হয়েছে ....কত জমে থাকা কথা ,কত গল্প ..... তারপরে কখন যেন প্রায় সকলের মনের মধ্যই শুরু হলো এক দাঁড়িপাল্লার খেলা .... মনে মনে প্রত্যেকেই একে অপরের সুখ সমৃদ্ধি জরিপ করছে ..... একটি সম্পর্কের মৃত্যু ...একটির জন্ম গতকাল সন্ধ্যাবেলাতেই কুলদীপ সিং ও তার মা নয়নাদেবী অবৈধ রিপোর্টটি নিয়ে বাড়ি ফিরলেন । দুজনেরই মুখ থমথমে । খুশবু জানে এর পরে কি হবে । গত দুবার ঠিক যেমন হয়েছিল । কিন্ত না , আর নয় ...এবার আর নয় । একটি সম্পর্ক হত্যা করে খুশবু তার গর্ভস্থ তৃতীয় কন্যাভ্রূণটিকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো । আর দেরি নয় । প্রথমে স্থানীয় পুলিশস্টেশন তারপরে অ্যাডভোকেটের চেম্বার .... ভোর না হতেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়লো খুশবু .......
留言