top of page

ভ্রমণ কাহিনী - মেঘ পিওনের দেশে

  • শ্রাবস্তী সেন
  • Apr 29, 2017
  • 6 min read

Updated: Feb 18, 2021

‘ইহার চেয়ে হতেম যদি আরব বেদুইন’-এই একটা ইচ্ছে বোধহয় মানুষকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় সারা জীবন ধরে।আমাদের প্রত্যেকের মনে বোধহয় একটা সুপ্ত ইচ্ছে থাকে বেদুইনদের মতন নতুন নতুন জায়গায় ঘুরে দেখতে,নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয় করতে।আর সেই ইচ্ছেটাই আমাদেরকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় দেশ থেকে দেশান্তরে।আমি মোনালিসা সেনগুপ্ত,আদতে গৃহবধূ,কিন্তু সংসারের সব দ্বায় দায়িত্ব সামলে টুকটাক একটু আধটু লেখালিখি করে থাকি।বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতে আমার লেখা মাঝেমধ্যেই প্রকাশিত হয়।এছাড়াও আমার আরেকটা নেশা হলো বেড়াতে যাওয়া।পরিবারের সঙ্গে বা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সময় সুযোগ পেলেই আমি বেড়িয়ে পড়ি অজানাকে জানার,অচেনাকে চেনার টানে।

কলেজে পড়ার সময় আমাদের কয়েকজন বন্ধুদের একটা গ্রুপ ছিল।আমরা আটজন সবসময় একসঙ্গে ওঠাবসা,হাসি-হুল্লোড় করে দিনগুলো বেশ কেটে যেত।তখন ভাবতাম এই ভাবেই বুঝি জীবনটা কেটে যাবে। আমরা এই ‘অষ্ট-সখি’এইভাবেই কাটিয়ে দেব জীবনটা। কিন্তু কালের নিয়মে আমরা সবাই ছড়িয়ে গেছি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন জায়গাতে।আজ আর যোগাযোগও নেই সবার সঙ্গে।তবু আমাদের পাঁচজনের মানে আমার,ইলোরা দত্তের,পুষ্পিতা দাসের,মধুরিমা ব্যানার্জির,ও সোমলতা রায়ের যোগাযোগটা আজও রয়ে গেছে।হয়তো নিয়মিত দেখা হয়না,কিন্তু কথাবার্তা মাঝেমধ্যেই হয়ে থাকে।তাই অনেক জল্পনা-কল্পনা করে আমরা ঠিক করলাম আমরা এই পাঁচজন মিলে কয়েকদিনের জন্য বেড়াতে যাবো একসঙ্গে।কারুর সঙ্গে কারুর বর,ছেলেমেয়ে কেউ যাবেনা।শুধু কয়েকদিনের জন্য আমরা কজন ঝাড়াহাতপা হয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসবো আমাদের ছোটবেলাটাকে।

কথায় বলে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়।তাই অনেক টালবাহানা সামলে অবশেষে একটা ‘পূজা স্পেশাল’ ট্রেনে আমরা পাঁচজন যাত্রা শুরু করলাম।এখানে আমাদের সম্পর্কে একটু বিশদে বলে নেওয়া উচিৎ বলে মনে হয়। আমি মোনালিসা আজ প্রায় চার বছর হলো স্বামীর কর্মসূত্রে ব্যাঙ্গালোর এর বাসিন্দা। শুধুমাত্র বন্ধুদের টানেই ছুটে এসেছি কলকাতাতে, নিজের সংসার থেকে কদিনের ছুটি নিয়ে। আমার বন্ধু ইলোরা কলকাতার উপকণ্ঠে একটা ইস্কুলের শিক্ষিকা,কলকাতাতেই থাকে। আরেক বন্ধু পুষ্পিতা গৃহবধূ,দক্ষিণ কলকাতাতে বাড়ি। আমাদের মধ্যে মধুরিমা বিয়ে করেনি,একটি এনজিও সাথে যুক্ত। আর সোমলতা এখন আমাদেরই কলেজের প্রফেসর। ইলোরা ও সোমলতার ছুটির কথা ভেবেই আমরা এই সময়টা বেছে নিয়েছি। ট্রেনে সেরকম উল্লেখযোগ্য কিছু না হলেও সবাই মিলে হইচই করে বেশ মজায় কেটে গেলো সময়টা। পরেরদিন সকালে প্রায় তিনঘণ্টা লেট করে ট্রেন এসে পৌঁছল নিউজলপাইগুড়ি স্টেশনে।

হোটেল থেকে গাড়ি পাঠিয়েছিল যাতে করে আমরা যাত্রা শুরু করলাম লাভার পথে। শিলিগুড়ি শহর পেরিয়ে সেবক রোড ধরে ক্রমশ: এগিয়ে চললাম সেবক ব্রিজের দিকে। রাস্তার অবস্থা কিছু জায়গায় ভীষণ খারাপ। সেবক ব্রিজের সামনে টা তো অবর্ণনীয়। বেশ কয়েক বছর আগে আরেকবার এসেছিলাম, সেবার মনে আছে সেবক ব্রিজের ওপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে তিস্তার ছবি তুলেছিলাম, যা আজও আমার ঘরে শোভা পাচ্ছে। আর এবার এবড়ো – খেবড়ো রাস্তা,ধুলো,ধোঁয়ায় জায়গাটা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এখানে একটা কথাই মনে হচ্ছে আমাদের নেতারা যদি নিজেদের স্বার্থের চিন্তার বাইরে বেড়িয়ে একটু রাজ্যটার কথা ভাবতেন তাহলে বোধহয় রাজ্যটার অবস্থা এত খারাপ হতোনা।

যাইহোক পথে ওদলাবাড়িতে একটা ধাবাতে গাড়ি থামিয়ে মধ্যান্হভোজন সেরে নিয়ে আবার আমরা রওনা দিলাম। ডামডিম পৌঁছে হাইওয়ে ছেড়ে আমরা পাশের রাস্তা ধরলাম। দুদিকে বিস্তীর্ণ চা বাগান। প্রকৃতি যেন সবুজ গালিচা পেতে আমাদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। মাঝে মাঝে চা শ্রমিকদের বস্তি। দুদিকের সবুজের সমারোহ যেন চোখ জুড়িয়ে দেয়। বেশ কিছুটা চলার পর গাড়ি এবার পাহাড়ের রাস্তা ধরল। দক্ষিণ ভারতের যেসব পাহাড় আছে তাতে দেখেছি বাঁক অনেক কম থাকে,কিন্ত উত্তরবাংলার পাহাড়ে যথেষ্ট বাঁক রয়েছে। আমাদের ড্রাইভার একজন অল্প বয়সী নেপালি ছেলে। সে দেখলাম এইরকম রাস্তায় গাড়ি চালাতে বেশ দক্ষ। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পরে আমরা লাভা পৌঁছলাম। ছোট্ট জায়গা,যদিও সব জায়গার মতো এখানেও ক্রমশ বাড়ছে পর্যটকদের ভিড় ও তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হোটেলের সংখ্যা। সুন্দর একটা মনাষ্ট্রি রয়েছে আর তার উল্টোদিকেই দাঁড়িয়ে আমাদের ‘হোটেল টিবেট বা ‘তিব্বত’। ছিমছাম ছোট্ট সুন্দর হোটেল,আমাদের পাঁচজনের জন্য দোতলায় দুটো ঘর দেওয়া হয়েছে। ঠিক হলো একটা ঘরে থাকবো আমি,ইলোরা ও মধুরিমা। আরেকটা ঘরে থাকবে পুষ্পিতা ও সোমলতা।

মহিলাদের নামে এমনিতেই বদনাম আছে একবার গল্প শুরু করলে সহজে থামতে চায়না। আর যদি সেই মহিলারা হয় ছোটবেলাকার বন্ধু তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সারাদিন গল্প যেন ফুরতেই চায়না। তবু ঠিক হলো হোটেলে লাগেজ রেখে একটু ফ্রেশ হয়ে নিয়ে আমরা রওনা হলাম রিশপের উদ্দেশ্যে। লাভা থেকে রিশপ প্রায় চার কিলোমিটার পাহাড়ি রাস্তা। জায়গাটা লাভার তুলনায় অনেক ছোট। পথের দুপাশে পাইন গাছের সারি। এখানকার পাইন ফরেস্ট বিখ্যাত। যদিও বর্ষাকালে ভীষণ জোঁকের উৎপাত হয়। যাইহোক রিশপ পৌঁছে আমরা অপেক্ষা করতে লাগলাম, এখান কার সানসেট বিখ্যাত। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সূর্যদেব অস্ত যাবেন। সমস্ত পাহাড়কে রক্তিম সিঁদুরে রাঙিয়ে তিনি যেন আমাদের সবার কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছেন। জায়গাটার একটা অদ্ভুত নিস্তব্ধতা রয়েছে। সভ্যতার কোলাহল থেকে মনে হয় যেন কিছুক্ষণের জন্য আমরা হারিয়ে গেছি প্রকৃতির সেই শান্ত ,সুন্দর রূপের কাছে। রিশপে কিন্তু বেশ ঠাণ্ডা। সূর্যাস্তের পর আমরা সেখান থেকে ফিরে এলাম আবার লাভাতে। এবার হোটেলে বিশ্রাম-কারণ পাহাড়ি জায়গায় যত রকম ব্যস্ততা সবই দিনের বেলায়,সন্ধ্যের সব বন্ধ,সব শান্ত।হোটেলে একটা দোকান আছে,যেখানে টুকিটাকি জিনিস কেনাকাটা করা হলো।জিনিস কেনার ব্যাপারে আমাদের মধ্যে মধুরিমার অনন্ত উৎসাহ। সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা ওই করলো।

পরের দিন সকালে উঠে আমরা তৈরি হয়ে নিলাম।আজ সারাদিন আমাদের অনেক ঘোরার রয়েছে।এইসময়ই হোটেলের ছাদে দাঁড়িয়ে দূরে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়াটা দেখতে পেলাম। সকালের নরম রোদ গায়ে মেখে মনে হচ্ছে যেন সোনার টিকলি পরা সালংকারা নববধূ। দেখেই এক নিমেষে যেন মনটা ভাল হয়ে গেল।

আজ আমাদের প্রথম গন্তব্য কালিম্পং।সেই পাহাড়ি রাস্তা,একপাশে আকাশচুম্বী পর্বতমালা,ও অন্যধারে অনেক নীচ দিয়ে বয়ে চলেছে চিরযুবতী তিস্তা। প্রথমে আমরা গেলাম একটা হনুমান মন্দিরে। বিশাল মূর্তি সংকটমোচনের। এখান থেকে গেলাম ‘সায়েন্স মিউজিয়াম’। ছোট্ট সুন্দর মিউজিয়াম ,বিজ্ঞানের নানান জিনিস দিয়ে সাজানো। পাশে বেশ বড় একটা বাগান যেখানে ডাইনোসরের বিভিন্ন প্রজাতির মূর্তি দিয়ে সাজানো ও তাদের সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা রয়েছে। পার্কটার নাম ও ‘ডাইনোসর পার্ক’। স্থানীয় একটি ইস্কুল থেকে বাচ্চাদের নিয়ে এসেছে।শিক্ষিকারা এই ডাইনোসর সম্বন্ধে প্রশ্নপত্র তৈরি করে হাতে হাতে বিলি করছেন,আর বাচ্চারা দৌড়োদৌড়ি করে উত্তর খুঁজে লিখছে। এইরকম উন্মুক্ত পরিবেশে পড়াশোনা করা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। ঘুরতে ঘুরতে ‘ডেলোতে’এসে পৌঁছলাম। এর আগে একবার ডেলোতে এসেছিলাম,সেবার খুব কম পর্যটক দেখেছিলাম। এবার দেখলাম গিজগিজ করছে লোক,বাইরে প্রায় খান পঁচিশেক গাড়ি দাঁড়িয়ে,ঠিক যেন মেলা বসেছে। প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হবার সুযোগ যেন সবজায়গাতেই কমে যাচ্ছে।

দড়ির ব্রিজ

লাভায় সূর্যাস্ত

দুপুরে একটা রেস্তোরাতে খাওয়া সেরে রওনা হলাম লোলেগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে।ওখানে পৌঁছতে প্রায় বিকেল হয়ে গেলো।এখানকার ‘দড়ির ব্রিজ ’ বিখ্যাত। এগোতে গেলে পুরো ব্রিজটা দুলে উঠছে। অবশ্য প্রথমে একটু দেখে চললে পরে অভ্যাস হয়ে যায়। আমাদের মধ্যে সোমলতার অবস্থা ভীষণ খারাপ। প্রচণ্ড ভয়ে ওর মুখ চোখ শুকিয়ে গেছে। তারমধ্যে মধুরিমা ইচ্ছে করে ব্রিজ ঝাঁকিয়ে দেওয়াতে সোমলতাতো ভয়েই অস্থির। সোমলতার অবশ্য এটা পুরনো রোগ। কলেজে থাকতেও কোনো ব্যাপারে একটু এদিক ওদিক হলেই ও ভয় পেয়ে যেত।এই নিয়ে আমরা সবাই কলেজে থাকতে কতো রাগাতাম। মাঝে অনেকটা সময় কেটে গেলেও,মানুষের কিছু অভ্যাস সেই একই থেকে যায়। বেশ কিছুক্ষণ সময় মজা করে কাটিয়ে আমরা আবার লাভা ফিরে চললাম।লাভা ফিরতে সন্ধ্যে হয়ে গেলো।পাহাড়ি রাস্তায় সন্ধ্যেবেলা ঘুট্ ঘুট্ করছে অন্ধকার।ক্রমশ: শীত ও বাড়ছে।শুনশান ফাঁকা রাস্তায় আমরা ভালো করে বুঝতেই পারছিনা কোথায় কি আছে।একটু যেমন ভয় করছিলো তেমন রোমাঞ্চ ও লাগছিলো।লাভা পৌঁছে ঘড়িতে দেখলাম সাতটাও বাজেনি।অথচ মনে হচ্ছে যেন গভীর রাত।

পরের দিন আমাদের ফিরে আসার কথা,কিন্তু হাতে কিছুটা সময় থাকায় ঠিক হলো কাছেই একটা জলপ্রপাত দেখতে যাওয়ার। নাম ‘চাঙ্গি ফলস্’।আগে কখনও এর নাম শুনিনি। স্থানীয় লোকেরাই প্রথম এর সম্বন্ধে বলল। জায়গাটা লাভার থেকে খুব দূরও নয় , মাত্র একঘণ্টার রাস্তা। যদিও এই পথকে আদৌ রাস্তা বলা উচিত কিনা তা নিয়ে মতান্তর থাকতেই পারে। চারিদিকে বড় বড় গাছ,একদিকে পাহাড়,অন্যদিকে গভীর খাদ। তার মধ্যে শুধু পাথর ফেলা পথ। গাড়ির ঝাঁকুনিতে সত্যি বসে থাকা দায়। মাঝে আমাদের পথে পড়ল ‘নেওরা-ভ্যালি’। তাকে পিছনে ফেলে আমরা এগিয়ে গেলাম আমাদের গন্তব্যের দিকে। একসময় গিয়ে পৌঁছলাম চাঙ্গি ফলসের গেটের কাছে। কিন্তু ফলস্ কোথায়? শুনলাম এখানে নাকি গাড়ির রাস্তা শেষ। এবার পায়ে হেঁটে নেমে যেতে হবে ৩-৪ কিলোমিটার। অগত্যা তাই সই ,শুরু হলো হাঁটা। কংক্রিটের রাস্তা, দুপাশে রেলিং দেওয়া-কিছুটা ঢালু মধ্যে মধ্যে সিঁড়ি রয়েছে। বেশ কিছুটা যাওয়ার পরে ঝর্ণার আওয়াজ শোনা গেলো। আর একটু এগোনোর পরে হাওয়ার সঙ্গে মিশে জলের বাষ্প মুখে লাগতে আরম্ভ হলো। কিন্তু এখনো বাকি আছে। চোখ জুড়িয়ে গেলো ফলসে্র সামনে এসে। কি সাঙ্ঘাতিক গতিতে জলধারা নেমে আসছে পাহাড়ের গা বেয়ে। আর নীচে নেমে যেখানে পড়ছে,সেখানে কি সাঙ্ঘাতিক স্রোত। এতক্ষণের পথকষ্ট যেন লাঘব হয়ে গেলো এর সামনে দাঁড়িয়ে।

সকালে একবার সামনের মনাষ্ট্রিটা ঘুরে এসেছিলাম। অদ্ভুত একটা শান্ত পরিবেশ। কিছুক্ষণ থাকলে মনটা ভালো হয়ে যায়। স্থানীয় একটা ছোট্ট ছেলে আমাদের মনাষ্ট্রিটা ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিল। জিজ্ঞেস করতে বলল ক্লাস ফোর এ পড়ে। আমাদের মধ্যে ইলোরা তার শিক্ষিকা সুলভ গাম্ভীর্য নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করতে শুনলাম ইস্কুলে দুটো ভাষা পড়ে, নেপালি ও ইংরেজি। অবাক লাগলো আমাদের নিজের রাজ্যে দাঁড়িয়ে আমাদের মাতৃভাষা না শিখলেও কোনো অসুবিধে নেই। অথচ ভারতবর্ষের অন্য যে কোনো রাজ্যে পড়তে গেলে সেখানকার স্থানীয় ভাষা পড়তেই হয়। বিস্মিত ইলোরার ভাষাতে বলতে হয় ‘এ যেন এক উল্টো রাজার দেশ’। যাইহোক সব ভালোরই শেষ আছে।আমাদেরও লাভাকে বিদায় জানানোর সময় উপস্থিত।ফিরতে হবে আমাদের প্রাত্যহিক রুটিনে।আবার সেই একই রাস্তা দিয়ে ফেরা শিলিগুড়িতে। তারপর সারারাত বাস জার্নি করে কলকাতা ফেরা।

একটা কথা আমার বারবার মনে হয়,পশ্চিমবঙ্গকে প্রকৃতি তার অকৃপণ হাতে সমস্ত ঐশ্বর্য দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়েছেন। আমরা সাধারণ মানুষ তার রূপ,রস,গন্ধে মোহিত হতে বারবার ছুটে যাই। কোনোরকম বাধা সৃষ্টি করে মানুষের সেই প্রবাহকে কে রোধ করা সম্ভব নয়,আর উচিৎ ও নয়। যাইহোক এবার আবার পাঁচজনের আবার বিচ্ছেদের সময়। এই কটা দিনে আমাদের সবার বয়স বোধহয় কম করে দশ বছর কমে গেছিল। এই ট্রিপটা ছিল আমাদের গতানুগতিকতার জীবনে হঠাৎ আসা একটা দমকা হাওয়ার মতো। যা তার সঙ্গে উড়িয়ে নিয়ে গেছে সব ক্লান্তি,মলিনতা আর দিয়ে গেছে অদম্য ইচ্ছেশক্তি ও উৎসাহ। তাই এবার আমরা সবাই ফিরে যাব ‘আপন কুলায়’। শুধু পরস্পরকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলাম সময় সুযোগ পেলেই আবার এইভাবে বেড়িয়ে পরব এই ‘পঞ্চপাণ্ডব’ আবার পথের টানে।

Comments


নীড়বাসনা  বৈশাখ ১৪২৯
bottom of page