এক গুচ্ছ কবিতা
- দীনেশ
- Aug 9, 2016
- 2 min read
Updated: Feb 17, 2021

গর্ভস্থ নদী ও পিরহান মাছ
ভর সন্ধেবেলা আস্ত নদী আমার পুরুষ-গর্ভে সঞ্চার লাগায় ।
‘যেথা হইতে আসিতেছি, সেথাই যাইতেছি’---
বলে নদীর এগজিস্ট ।
শুরু বারোমাস্যা ।
গর্ভ তোলপাড়
পিরহান মাছের ঝাঁক রক্ত মজ্জা অণ্ড শুঁকে শুঁকে
আমার অণ্ডামি ভণ্ডামি সব আঁতুড়ঘর ম্যাসাকার,
অল ইজ ওয়েল – লাথি - ক্যাঁক,
অল ইজ ওয়েল – লাথি - ক্যাঁক,
গর্ভ উথাল পাথাল
মাইথন পাঞ্চেত ---‘ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ।
বছর শেষে,
বিষণ্ণ বিকেলে চিত শুয়ে
খুলে নিই পিরহান করাতের কল
গোলাপি নরম ঠোঁট সাঁটি, করাতের থেকে আরও খতরনক ।
এসো
ধাত্রী এসো, ভগীরথ হও
বিষ নয়, অমৃতও নয়,
শুধু এক নদী আনো আজ ।
যে নদীর পাড় ধরে, আবছা কুয়াশায় মহেঞ্জোদারোর পথে হেঁটে যায়
ক্লান্ত রাখালদাস ।

মারাংবুরুর সঙ্গে সেলফি
যতবার খুঁজেছি ঘর, দুচোখে জঙ্গল
যতবার গড়েছি ঘর, বুকেতে জঙ্গল
যতবার ভেঙ্গেছি ঘর, তফাতে জঙ্গল
ততবার ছেড়েছি ঘর, পেতেছি জঙ্গল।
মন ভালো থাকলে, মন ভালো না থাকলে, আমি উলঙ্গ জঙ্গল
ট্রাফিক মোড়ের গান রক্তের থেকে চুইয়ে পড়ে
ছিঁড়ে খায় নির্জনতা---ঠা ঠা রোদ ছেয়ে আছে
মহুয়ার সাদা গন্ধ ঝরে আছে সারা জঙ্গলে ,
হাঁটতে হাঁটতে মারাংবুরু-র সঙ্গে দেখা হয়ে যায়,
নরম ছায়ায় মাখা শাল পাতায় --
লাল পিঁপড়ের ডিমের চাট।
চাট দিয়ে দুপুর পেটে মহুয়া দুজনে।
নেড়া পাহাড়গুলো ডানা মেলে খানিক চক্কর দিল।
উই ঢিপির পেছনে মারাংবুরুর সাথে সেলফি---ততক্ষণ।
তারপর মেঘ জমল,
জমল মাদল,
দেখতে দেখতে বৃষ্টি নামলো-
বুলেটের গরম বৃষ্টি –
ঝাঁজরা হয়ে জঙ্গলের মাটি কালো হল।
নেড়া পাহাড়গুলো খুলে রেখেছে ডানা-
সেই ডানায় উড়ে যেতে যেতে
আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি-
রক্তে কালো মাটি আর আমার সঙ্গে সেলফি তে মেতেছে মারাংবুরু।
যতবার খুঁড়েছি ঘর, খুঁড়েছি জঙ্গল
যতবার পুড়েছে ঘর, ডেকেছি জঙ্গল..................।

উইদিন দ ব্র্যাকেট
বন্ধনী তোর জন্য নয়,
তোর গন্ধে লাল কাঁকড়া হয়, সকাম প্রেমিক ।
আকাশগঙ্গা চাষ করে জিয়ন কাঠি সাহেব
রামধনু কটা ডানা মেলে?
কোন সমুদ্দুর শেভ করে কোন রাখালের নাম?
মুহূর্তে সার্চ, সার্চ, সার্চ...।
মার্চের ঘরে বসে কাপালিক পেঙ্গুইন বলি দিতে চায়
হাল্কা ওয়াইন, স্কাইপ-এ নব নব কু-মার
ছারখার পুড়ে ছাই বাঁশদ্রোণী বস্তির কবিতার লাইন
সোনা পোকা জল মাপে অষ্টমঙ্গলায়,
জোনাকি মাখানো চাল তালুতে ফুটেছে তেরাত্তির
আয় শুঁয়োপোকা, তোকে ডানা পরাই ।
বন্ধনী তোর জন্য নয়,
তোর বুকে বুকে আঁকি জ্যান্ত ক্যালেন্ডার
সব দিন সব রাত সব লাল রবিবার
মেঘে মেঘে মেলে দে তোর যত বন্ধনী
রোদ চুরি করুক তোর অন্তর্বাস,
বন্ধনী আজ তোর জন্য নয়
তোর জন্য নয় কোন বন্ধনী ।

ফ্লেক্সিবল হরকচ র্যাফটিং
হরকচ ফুলের বন তোমার ঘাটে ঢেউ রেখে যায়
যদিও নীল হরকচ তুমি দেখ নি কখনও,
তোমার স্বপ্নের বালিশও হয় নি
নৌকোর হাত পা সমেত জলের পেটে সেঁধিয়ে যাওয়া ।
বিন্দু আর বিসর্গ নাক চেপে ডুব,
অচেনা হাত পাখা ঢুকে পড়ে গোপন উল্লাসে ।
পাতা কাঁপা অরণ্যে তুমি পেতে রাখো
ফ্লেক্সিবল ভালোবাসা ।
টেবিলে সাজানো চোখ মেপে নেয় বারুদ দামামা
করলার আকর্ষ অনামিকা ছেড়ে ভাসায় জাহাজ
এ কাঠ শরীর থেকে খুলে ফেলো খিল,
দাঁত দিয়ে তুলে ফেলি পেরেক জলুই কাতা দড়ী
লিপ-লক লিপ-লক লিপ-লক লিপ-লক
র্যাফটিং বোট হও
ড্যাগার সাজানো নিমন্ত্রণ টেবিল থাক
হরকচ ফুলের ঢেউ, পাশবালিশ, যুবতী মড়া কাঠ
কাঠঘুণ, ঘুণাক্ষর অক্ষর পর্ণ পরিচয়
স্বরগম ব্যঞ্জন-গম ব্যঞ্জন-ধান আলো ধানি
পা ধা নি, মাপা পা, পানি পানি পানি ---
র্যাফটিং অভিযান শুরু হোক ।
Comments